পেকুয়া প্রতিনিধি ::
পেকুয়ায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বেড়েছে চিকিৎসা সেবার মান। সরকারী ওই প্রতিষ্টানটিতে সেবার মান নজিরবিহীন বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রান্তিক অঞ্চলের সেবা প্রাপ্তিরা এ প্রতিষ্টান মুখী হচ্ছেন। মানুষের আস্থা বেড়েছে ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেটির দিকে। তবে চিকিৎসা সেবার যুগান্তকারী উন্নতি সাধিত হলেও উপজেলার চিকিৎসা সেবার সর্ববৃহৎ এ প্রতিষ্টানটিতে জনবল সংকট তীব্রতর। পদবী ১১২ টি। সেখানে বর্তমানে জনবল আছে মাত্র ৩৭ জন। আরও ৭৫টি পদে জনবল শূন্য রয়েছে। চিকিৎসা সেবায় অন্তরায় হচ্ছে শূন্যপদে জনবল সংকট। অপরদিকে ওই হাসপাতালের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর একটি এ্যাম্বুলেন্স সরবরাহ দিয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে ওই এ্যাম্বুলেন্সটি বিকল অবস্থায় অকার্যকর পড়ে আছে। এ্যাম্বুলেন্স হাসপাতালের জন্য গুরুত্বপূর্ন অঙ্গ। সেটি বিকল থাকায় এর নেতিবাচক প্রভাব এ প্রতিষ্টানে দেখা দিয়েছে। এ্যাম্বুলেন্সের জন্য একজন কর্মচারী আছে। সেটি বিকল থাকায় চালক বেকার আছে। তবে সরকার তাকে নিয়মিত বেতন দেয়। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পেকুয়ায় চিকিৎসা সেবার মান বৃদ্ধি পেয়েছে। এক সময় এ প্রতিষ্টানটি ছিল অকার্যকর। রোগীরা এ প্রতিষ্টানটির প্রতি বিমুখ ছিল। পিছিয়েছিল চিকিৎসাসহ সেবা কার্যে। এক সময় এ প্রতিষ্টানটি জনগনের অনাস্থার মধ্যে ঠাই পেয়েছিল। সে অবস্থা বর্তমানে নেই। সরকার সারা দেশের হাসপাতাল গুলোতে নজরদারী বৃদ্ধি করে। চিকিৎসা নাগরিকের মৌলিক অধিকার। সেটি অনিশ্চিত ছিল। বর্তমান সরকার এ মৌলিক খাতটি জনগনের দোরগোড়ায় পৌছাতে অত্যন্ত আগ্রহী। এতে দেশের সব সরকারী প্রতিষ্টানসমুহতে সেবার মান বেড়ে গেছে। চিকিৎসক ও সেবিকাদের সমন্বয়ে প্রতিনিয়ত নজরদারী হাসপাতালে বেড়ে যায়। উপজেলা পেকুয়ায়ও সরকারী এ প্রতিষ্টানটিতে এর প্রভাব পড়ে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পেকুয়ায় ভীড় করছে সেবা প্রার্থীরা। ৭ ইউনিয়নের প্রত্যেক প্রান্ত থেকে জনগন এ প্রতিষ্টানে জড়ো হচ্ছে। ২৪ ঘন্টা জরুরী বিভাগ উম্মুক্ত রাখা হচ্ছে। যে কোন জটিল ও কঠিন রোগীরা এ হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। জখমী রোগীর ভর্তি সংখ্যা বেশী। একঝাঁক চিকিৎসক ও সেবিকা চিকিৎসায় ব্যস্ত আছেন। হাসপাতালের মহিলা ও পুরুষ বিভাগে রোগীর জট পরিলক্ষিত হচ্ছে। এক সময় ময়লা আবর্জনায় সঙ্গী ছিল হাসপাতালটি। শয্যে বেড বিছানায় দুর্গন্ধ ছড়াত। তবে বর্তমানে এর অবসান হয়েছে। লেব, তোষক, বালিশ ও বেডসিট স্যাতস্যাঁতে। এ সব ধুলোবালি থেকে মুক্ত। সিনিয়র ও জুনিয়র চিকিৎসকরা শিপ্টে ভাগাভাগি করে কর্তব্যপালনে ব্যস্ত। সেই সাথে গাইনিষ্ট চিকিৎসকের নজরদারীতে চিকিৎসা ও সেবা পাচ্ছেন প্রসূতি ও গর্ভবতী মহিলারা। নারী চিকিৎসকরা গর্ভবতীদের চেকআপ ও প্রসব বেদনায় সেবা দেন। হাসপাতাল সুত্র জানায়, ২০ শয্যা হাসপাতাল থেকে এর সম্প্রসারন হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর গেল ২০১৭-১৮ অর্থ বছরের এ প্রতিষ্টানটি ৫০ শয্যা উন্নীতিকরন করে। বর্তমান অবকাঠামোগত উন্নয়ন সাধিত হচ্ছে। এর জন্য অত্যাধুনিক ও ব্যয় বহুল বহুতল ভবন বরাদ্ধ দিয়েছে। সেটির কাজ চলমান আছে। সুত্র জানায়, ৫০ শয্যা হাসপাতালের জন্য সরকার জনবল বরাদ্ধ দিয়ে থাকেন ১১২ জন। টিএইচও, আরএমও, গাইনী কনসালটেন্ট, মেডিকেল অফিসার, উপসহকারী মেডিকেল অফিসার, নার্স, সুইপার, আয়া, ড্রাইভারসহ অন্যান্য খাতে ১১২ জন মোট জনবল। হাসপাতালটিতে চাহিদার অনেক কম বর্তমানে জনবল সংখ্যা ৩৭ জন। ৭৫ জন জনবল সংকট এ প্রতিষ্টানটিতে। এ ছাড়া আসবাবপত্র সংকটও ঘনীভূত হয়েছে। ৫০ শয্যা উন্নীত হলেও আসবাবপত্র সংকট আরও তীব্রতর। বেড ও বিছানা সরবরাহ নেই। মেডিসিন সরবরাহ আছে। সরকার থেকে বিনামুল্যে সরবরাহ মেডিসিন জনগন ও সেবা প্রাপ্তিদের মাঝে বিলি হচ্ছে। কয়েকজন নার্স সেবায় রোগীদের দৃষ্টি আকৃষ্ট করে। এ সব সেবিকা এ সেবাকে মানুষের অন্তরে স্থান পেয়েছে। শাপলা, সাবিনা, সঞ্চিতাদাশ, মাসুদা বেগম ও ইছমত আরাসহ কর্মরত সেবিকারা জানায়, তারা রাত দিন এ হাসপাতালে রোগীদের সেবা দিচ্ছেন। উপসহকারী মেডিকেল অফিসার জিয়াউদ্দিন জানায়, আমরা চিকিৎসা সেবা দিতে বাধ্য। চিকিৎসা নাগরিকের মৌলিক অধিকার। সেটি অন্তরে নিয়েছি। যে জনগন পরিশ্রমের টাকা দিয়ে আমাদেরকে বেতন দেয়। এদের অবহেলা করা যায় না। সিনিয়র মেডিকেল অফিসার ডাক্তার মুজিবুর রহমান জানায়, মানুষ চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে। ক্লান্তিকাল অতিক্রান্ত হয়েছে। বর্তমানে সেবা সুদুরপ্রসারী হয়েছে। মানুষ আসলে আস্থাশীল।
পাঠকের মতামত: